ত্রিশাল উপজেলার বিভিন্ন সমস্যা, সম্ভাবনা, অনিয়ম, দুর্নীতি, জন সাধারণের দুর্ভোগের কথা ও অসংগতিপুর্ন রাজনৈতিক খবরাখবর বারবার ত্রিশাল বার্তায় ছাপানোর কারনে অনেক রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ত্রিশাল বার্তার সমালোচনা করেন, মাইন্ড করেন। ত্রিশাল বার্তায় লেখার কারণে নাকি তাদের ইমেজ নষ্ট হয়। কিন্তু বাস্তবে তা ঠিক নয়। আমরা মনে করি এতে ব্যক্তি বা দলের ইমেজ বাড়ে। বারবার লেখার কারনে অনেক সমস্যার দ্রæত সমাধান হয়েছে, ফলে সাধারণ মানুষ তাদের ধন্যবাদও দিয়েছে।

ত্রিশাল বার্তা নিয়ে অনেক সময় অনেকের ব্যবহার বা অবস্থান ব্যথিত করে। মনে হয় তাদের কাছে ত্রিশাল বার্তা খুবই অচেনা। তারা প্রায়ই সস্তা মন্তব্য করে থাকেন। কখনও কোন দিন ত্রিশাল বার্তাকে কোন প্রকার পরামর্শ, উৎসাহ বা সহযোগীতা করে না এসব সমালোচকরা। সব রাজনৈতিক দলের সব নিউজ সব সময় ত্রিশাল বার্তা অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে প্রকাশ করার পরেও ঐসব সমালোচনাকারী নেতারা কোনদিন একটা ফোন করে ধন্যবাদও দেন না। তাতে আমরা দুঃখিত নই।

আমরা দুঃখিত তাদের জন্যই যারা ত্রিশালের রাজনীতির নীতি নির্ধারক, তারা জানেন না বা বুঝেন না ত্রিশাল বার্তা বর্তমানে ত্রিশাল উপজেলার প্রতিটি এলাকার ঘরে ঘরে সরবরাহ করা হয়ে থাকে। ত্রিশালের প্রত্যন্ত অঞ্চলের সাধারণ মানুষ ত্রিশাল বার্তাকে কতটুকু সম্মান করেন ঐ সকল নেতাদের অনুরোধ করে লিখছি খবর নিয়ে দেখুন এবং জানুন। ঘাটতি কার হচ্ছে ত্রিশাল বার্তার না আপনার? জোর করে, চাপাবাজি করে মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। যা করার তা ভালবাসা দিয়েই করতে হয়।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপি প্রধান খালেদা জিয়া ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদ এ তিন জনই কিন্তু মিডিয়াকে ভালবাসেন বিনিময়ে তারাও ভালবাসা পান। যারা দেশ চালায় তারা মিডিয়াকে ঠিকই ভাল চোখে দেখেন। আর  ত্রিশালের দু’এক জন নেতা ত্রিশাল বার্তাকে কতটুকু মূল্যায়ন করেন তা নিরূপন করার ক্ষমতা আমি নগন্যের নেই। কারণ হিসেবে ক্ষুদ্র জ্ঞানে যে টুকু বুঝি তা হল- হয়ত ত্রিশাল বার্তা তাদের প্রয়োজন মিটাতে সক্ষম নয় অথবা ত্রিশাল বার্তা এ অঞ্চলের একটি অখ্যাত পত্রিকা অথবা ত্রিশালের ইতিহাস, ঐতিহ্য, উন্নয়ন, সম্ভবনা ফুটিয়ে তুলতে অক্ষম অথবা ত্রিশাল বার্তায় যারা জড়িত তারা এ সমাজের যোগ্য মানুষ নন অথবা অন্য কোন কারণও তারা বুঝতে পারেন।

যাক সে কথা, ২/১ জন নেতার কথা বলছি। তারা যার যার দলে একটা অবস্থানে রয়েছেন। মিডিয়ার সাথে সব সময়ই তাদের যোগাযোগ রয়েছে। বিগত নির্বাচনসমুহে তাদেরকে যারা ভোট দিয়েছেন ঠিক তাদের অধিকাংশ মানুষই কিন্তু ত্রিশাল বার্তা নিয়মিত পড়েন, ত্রিশাল বার্তাকে ভালবাসেন, ত্রিশাল বার্তাকে ত্রিশালের মুখপত্র মনে করেন। তাদের নিজের পত্রিকা মনে করেন।

ত্রিশাল বার্তার সম্পাদক হিসেবে সম্মানিত ত্রিশাল উপজেলাবাসীর কাছে আমার আর চাওয়া পাওয়ার কিছু নেই। ত্রিশাল উপজেলাবাসী ত্রিশাল বার্তাকে যে সম্মান আর ভালবাসা দিয়েছে তাতে আমি ধন্য আর তাদের প্রতি চির কৃতজ্ঞ।

ত্রিশালে নেতাদের কেউ কেউ সাংবাদিকদের সাথে মাখামাখি করতে শোনা যায় বা দেখা যায়। বিচারের ভার ত্রিশালবাসীর উপর। তবে ত্রিশাল বার্তা পত্রিকা অপসাংবাদিকতা করে না, কারো কাছ থেকে দান-অনুদান বা অবৈধ কিছু গ্রহণ করে না। ত্রিশাল বার্তা পত্রিকা নিয়মিত প্রকাশিত হচ্ছে, পত্রিকা চলে পত্রিকা বিক্রির টাকা আর বিজ্ঞাপন বিলের টাকা দিয়ে।

ত্রিশালে অনেক রাজনৈতিক নেতা রয়েছেন যারা ত্রিশাল বার্তায় বিজ্ঞাপন ছেপে বিল পর্যন্ত পরিশোধ করেন না। বিগত ২৫ বছরে ত্রিশাল বার্তা কারো থেকে অন্যায় ভাবে বা অবৈধভাবে কোন সুবিধা গ্রহন করেনি। নেতাদের ২/১ জন হয়ত ত্রিশাল বার্তা পড়েন না বা পড়ার সময় পান না এতে দুঃখ নেই। দুঃখ একটাই ত্রিশালের তৃনমুলের সাধারন মানুষ ত্রিশাল বার্তার পাঠক, ২/১ জন নেতাকে ত্রিশাল বার্তার গ্রাহক বা পাঠক তৈরী করতে পারলাম না, এ আমার চরম ব্যর্থতা। হয়ত এ পত্রিকা পড়লে ত্রিশালের অনেক বিষয়, অনেক সমস্যার কথা, অনেক সম্ভাবনার কথা পড়ে হয়ত ত্রিশালের জন্য আরও বেশী কাজ করতে পারতেন। কারন এ পত্রিকায় এ এলাকার মাটি-মানুষের সমস্যা এবং সম্ভাবনার কথা লেখা হয়ে থাকে।

ত্রিশালের ২/১ জন নেতার অতি কাছের কয়েকজন মানুষ রয়েছে, যারা ত্রিশালের প্রকৃত সমস্যা বা বিষয়কে কৌশলে নেতাদের জানার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করছেন।

ত্রিশালের স্থানীয় মিডিয়ায় তাদের তেমন কোন যোগাযোগ নেই। ত্রিশাল বার্তা’র সঙ্গে কি এক অদৃশ্য কারণে তাদের একটি বড় গ্যাপ তৈরি হয়েছে। অনেক সময় বিভিন্ন সমস্্যার কথা পত্রিকায় লেখা ছাড়াও অনেকে এমপি থাকাকালিন সময়ে তাদের কাছের ২/১ জন নেতাদের বলেছি বাস্তবতার কথা, সঠিক বিষয় এমপি সাহেবকে জানান, অবহিত করুন। কিছু নেতার অনিয়ম. দুর্নীতির কথা আমরা প্রকাশ করেছি। অথচ সবই ঠিকঠাক আগের মতই চলছে। আমাদের ধারণা বিশেষ কোন চক্র কৌশলে নেতাদেরকে মিডিয়া থেকে দুরে সরিয়ে রেখেছেন। আমি কারও নাম নেব না। তবে এতটুকু বলতে পারি পাতি নেতাদের অনেকের ব্যক্তিগত পছন্দ অপছন্দ এবং লোভ লালসার খেসারত নির্বাচনে প্রার্থীকেই দিতে হয়েছে বা দিতে হবে।

সমালোচনা সহ্য করার ক্ষমতা রাখুন, অবশ্যই মিডিয়া আপনাদের ভালমন্দ নিয়ে লিখবে এতে ক্ষেপে যাওয়ার কিছু নেই। রাজনীতি করলে সমালোচনা জনগণ করবেই। সমালোচনায় ক্ষেপে না গিয়ে আত্ম শুদ্ধি করাই বুদ্ধিমান রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের কাজ। আসলে মিডিয়া মানুষের মনের মধ্যে অনেক ধরনের পরিবর্তন আনে কিন্তু কেউ বুঝতে পারে, আর কেউ বুঝতে পারে না। মিডিয়ার কাজই হচ্ছে সময়, সমস্যা ও সম্ভাবনাকেকে তুলে আনা। মিডিয়া কখনো ক্ষমতার পাশে থাকে না। লুটপাট, কেলেংকারী বা অনিয়মের সহায়তা করে না।

সমস্যা ঘরে বাইরে, ত্যাগী নেতা কর্মীদের যাওয়ার জায়গা নেই। তাদের দেখার কেউ নেই। সবাই যার যার স্বার্থে ব্যস্ত, কিছু কিছু নেতাকর্মী আগ্রাসী ভাবে বা না বুঝে কিছু উল্টা পাল্টা করে থাকেন। এ সকল অনিয়ম বা কর্মকান্ড মিডিয়াতে উঠে আসা মানে মিডিয়ার সাথে কোন রাজনৈতিক দল বা ব্যক্তির দুরত্ব নয়। এ সকল কথা লিখলে তাদের বিরোধিতা করা হয় না, সমালোচনা লেখা নিয়ে মিডিয়ার সাথে দূরত্বের কোন কারণ নেই। আর যারা মিডিয়াকে বর্জন করতে উদ্বোদ্ধ করেন তারা প্রকৃত ভাবে দলের বন্ধু নন। কারণ দলকে তারা ঐ কাজটি করে কাঠিন্যের দিকেই ঠেলে দিচ্ছে। মনে রাখা দরকার জোর করে বা শক্রতা করে মিডিয়াকে বাংলাদেশ নয় পৃথিবীর কোন দেশের কোন রাজনৈতিক দল বা ব্যক্তি আজ পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণ করতে পারে নি। বাস্তবতায় থাকতে হবে, নেতাদের সমালোচনা সহ্য করতে হবে, একই সংগে নিজেদের সংশোধন হতে হবে, লড়াই করে নয়।

তাই রক্তচুক্ষ নিয়ে মিডিয়াকে দমন, নিয়ন্ত্রণ, উপেক্ষা, বর্জনের মত হটকারিতার দিকে না গিয়ে ভালবাসা দিয়ে সমালোচনা, সংশোধন ও বাস্তবায়ন করলে উপকৃত হবে ত্রিশাল উপজেলার সাধারন মানুষ, নিজ দল আর বাংলাদেশ।

ত্রিশাল উপজেলার বিভিন্ন রাজনৈতিক দল যদি দলের গৃহপালিত আস্তা ভাজন কয়েকজন নেতাকে আর বিশ্বাস না করেন, সুযোগ সুবিধা না দেন তাহলেই কেবল ত্রিশালের সঠিক বিষয়গুলো সঠিকভাবে জানতে পেরে সঠিকভাবে সমাধান করতে পারবেন। তাতে উপকৃত হবেন আপনি, পরে আপনার দল আর সবশেষে আপনার আমার মাতৃভূমি বাংলাদেশ।