দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর আগামী ১ জুলাই, ২০২২ইং তারিখে ত্রিশাল উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সম্মেলনের দিন যত ঘনিয়ে আসছে নেতা কর্মীদের আশা-আকাঙ্খা ততই বাড়ছে। পত্র-পত্রিকা ও ফেসবুকের প্রচার প্রচারণাতেও এ আগ্রহ ও উত্তেজনা দৃশ্যমান হচ্ছে।

একটি কথা খুব স্পষ্ট ভাবেই বারবার উঠে আসছে, তৃণমূল আওয়ামী লীগ কেমন নেতৃত্ব প্রত্যাশা করে? এখানে খুব স্বল্প পরিসরে একজন তৃণমূল আওয়ামী লীগ কর্মীর প্রত্যাশা তুলে ধরার নিমিত্তেই এ লেখার অবতারণা।

১. যে নেতৃত্বের কাছে ব্যক্তিস্বার্থের চেয়ে দলীয় স্বার্থ প্রাধান্য পাবে :

শুরুতেই আপনাদের একটি সালের কথা মনে করিয়ে দিতে চাই। ২০০৩ সাল, যখন বিএনপি-জামাত ক্ষমতায়। সেই দুঃসময়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে কাউন্সিলরদের ভোটে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন আবুল কালাম। তখন কিন্তু আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ছিলো না। সেই দুঃসময়ে সময়েও আবুল কালাম ত্রিশাল উপজেলা আওয়ামী লীগের দায়িত্ব পালন করেছেন। আর এ দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে বারবার পুলিশের নির্যাতনের শিকার হয়েছেন এবং বিএনপি-জামাত জোট সরকারের ৫টি মিথ্যা মামলায় নির্যাতিত ও হয়রানির শিকার হয়েছেন।

সারা জীবন নৌকার পক্ষে কাজ করা নেতা আবুল কালামের সমগ্র রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের  দিকে একটু নজর দিলেই দেখা যায়, ১৯৮২ সালে ত্রিশাল নজরুল ডিগ্রী কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন। তখন দেশে এরশাদের শাসনামল। ১৯৮৭ সালে ত্রিশাল উপজেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক নির্বাচিত হয়েছিলেন। তখনও এরশাদের স্বৈরশাসন চলমান। বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ, ত্রিশাল উপজেলা শাখার প্রচার সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন ১৯৮৮ থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত। ১৯৯১ সালেই আবুল কালাম উপজেলা আওয়ামী লীগে জায়গা পান ও প্রচার সম্পাদক নির্বাচিত হন। তখন রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় বিএনপি।  ২০০১ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত আবুল কালাম ত্রিশাল উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন।

আওয়ামী লীগের জন্য ত্যাগী এ মানুষটির সমগ্র রাজনৈতিক জীবনের সকল উত্থান ঘটেছে যখন আওয়ামী লীগ বিরোধী দলে ছিলো। তাই এটি বলার অপেক্ষা রাখে না, আবুল কালাম ত্রিশাল উপজেলার আওয়ামী রাজনীতিতে আদর্শের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ একজন ব্যক্তি যে আজীবন বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বুকে লালন করে রাজনীতি করেছেন, কখনও দলের সিদ্ধান্তের বাইরে কোন কার্যক্রমে অংশগ্রহন করেনি, বঙ্গবন্ধু ও জননেত্রী শেখ হাসিনার আদর্শকে অন্তরে ধারন করেই ১৯৮২ সাল থেকে ২০২২ সাল অর্থাৎ একাধারে ৪০ বছর যাবৎ বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় আওয়ামী লীগের সৈনিক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।

ত্রিশাল উপজেলার আওয়ামী রাজনীতিতে যখন অনেকেই বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অযুহাতে আওয়ামী লীগ তথা নৌকার বিরোধী কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়েছেন ঠিক সমসাময়িক সময়ে আবুল কালাম প্রতিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেছেন, রাজপথে নেতৃত্ব দিয়েছেন সামনে থেকে। তাকে বা তার পছন্দের মানুষকে কেন মনোনয়ন দেয়া হয়নি, সে কথা কখনো চিন্তা করেননি, বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে সারাজীবন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে রাজপথে নেতৃত্ব দিয়েছেন সামনে থেকে।

আবুল কালাম তাঁর রাজনৈতিক জীবনের সমগ্র পথচলায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ তথা নৌকা মার্কার পক্ষেই কাজ করেছেন। বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বুকে ধারণ করে জননেত্রী শেখ হাসিনার সকল সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে অবিচল থেকেছেন। তাই এ কথা বলার সময় এসেছে ত্যাগী নেতা আবুল কালামের কাছে ব্যক্তি স্বার্থের চেয়ে দলীয় স্বার্থই মূখ্য।

২. যে নেতৃত্ব তৃণমূল থেকে গড়ে উঠেছে, যে নেতৃত্ব কর্মীবান্ধব :

আবুল কালাম ছাত্রলীগ, যুবলীগের দায়িত্ব পালন করেই আওয়ামী রাজনীতিতে জায়গা করে নেন। ত্রিশালের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নজরুল ডিগ্রী কলেজের ছাত্রলীগের নেতৃত্ব দিয়েছেন। এরশাদের স্বৈরশাসনের সময় যুবলীগের রাজনীতি করেছেন। আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে তৃণমূল কর্মীদের আস্থাভাজন হিসেবেই আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ জায়গা পেয়েছেন। আবুল কালামের রাজনৈতিক অর্জনই বলে দেয়, যে সময়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে তৃণমূল থেকেই তিনি উঠে এসেছেন। 

তৃণমূল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তাদের সুখে-দুঃখে, মামলা-হামলায় সবসময়ই কর্মীবান্ধব নেতা আবুল কালামকে পাশে পেয়েছেন। আবুল কালাম তাঁর রাজনৈতিক পদবী ব্যবহার করে কোন অনিয়ম, দুর্ণীতি, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িত হয়েছেন এমন কোন কথা তাঁর শত্রæরাও বলতে পারবে না। ক্লীন ইমেজের নেতা আবুল কালাম আওয়ামী রাজনীতিতে কোনদিনই রাজনৈতিক বিভেদ-বিভাজন-গ্রæপিং কে সমর্থন বা প্রশ্রয় দেননি বরং তাঁর সামর্থ্য অনুযায়ী তৃণমূলের সকল নেতাকর্মীর পাশে থাকার চেষ্টা করেছেন।

৩. সমাজের কাছে গ্রহণযোগ্য একজন মানুষ আবুল কালাম :

একজন রাজনৈতিক কর্মী যখন নেতৃত্বে আসীন হন তখন আপামর জনগণ খেয়াল করে সেই মানুষটি সামাজিক অবস্থানের বিচারে একজন গ্রহণযোগ্য মানুষ কিনা?

ত্রিশালের সামাজিক উন্নয়ন ও শিক্ষার উন্নয়ন নিয়ে আবুল কালাম অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছেন। তিনি ত্রিশালে শিক্ষার মান উন্নয়নে তার ভ্রাতৃবৃন্দদের সাথে নিয়ে প্রতিষ্ঠা করেছেন ত্রিশাল কৃষি কলেজ, রাহেলা-হযরত মডেল স্কুল। গরীব ও এতিম শিক্ষার্থীদের জন্য প্রতিষ্ঠা করেছেন হযরত আলী দারুল উলূম মাদ্রাসা। তাঁর বড় ভাই অধ্যাপক মোঃ আব্দুল আউয়াল ত্রিশাল সরকারি নজরুল কলেজে অধ্যাপনার পাশাপাশি ত্রিশালে শিক্ষার মান যুগোপযোগী করার লক্ষ্য প্রতিষ্ঠা করেছিলেন শুকতারা বিদ্যানিকেতন স্কুল। আবুল কালাম ত্রিশালের বিভিন্ন পর্যায়ের  সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানের পৃষ্ঠপোষকতার সাথে জড়িত রয়েছেন। ত্রিশালের মানুষের কাছে আবুল কালাম রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে যেমন পরিচিত একই সাথে একজন শিক্ষানুরাগী ও সমাজসেবী মানুষ হিসেবেও গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি।

বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সোনার বাংলা আর জননেত্রী শেখ হাসিনার সুখী-সুন্দর-সমৃদ্ধ ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রায় ত্রিশাল উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বকে সুসংগঠিত রাখতে তৃণমূলের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মী জননেত্রী শেখ হাসিনার বিশ্বস্থ ভ্যানগার্ড, স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনসহ সকল আন্দোলনে ত্রিশালের রাজপথ কাঁপানো মুজিব সেনিক, ক্লীন ইমেজ এবং সাদা মনের মানুষ, দুর্দিনে-দুঃসময়ে দলের দায়িত্ব পালন করা জননেতা আলহাজ্ব আবুল কালামকে আগামী ১ জুলাই ২০২২ তারিখের ত্রিশাল  উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে সভাপতি হিসেবে দেখতে চান ত্রিশালের মানুষ।

আলহাজ্ব মোঃ আবুল কালাম সাহেবের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার :

সভাপতি : বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, ত্রিশাল নজরুল ডিগ্রী কলেজ শাখা, (১৯৮২-১৯৮৪)

সহ-সভাপতি : বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, ত্রিশাল থানা শাখা (১৯৮৫-১৯৮৬)

আহবায়ক : বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, ত্রিশাল থানা শাখা (১৯৮৭-১৯৮৮)

প্রচার সম্পাদক : বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ, ত্রিশাল উপজেলা শাখা (১৯৮৮-১৯৯০)

প্রচার সম্পাদক : বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, ত্রিশাল উপজেলা শাখা (১৯৯০-১৯৯১) 

যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক : বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, ত্রিশাল উপজেলা শাখা (১৯৯১--১৯৯৬)

যুগ্ম আহবায়ক : বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, ত্রিশাল উপজেলা শাখা (২০০১-২০০৩)

সম্মানিত সদস্য : ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগ (২০০৪-২০১৬)

নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক : ত্রিশাল উপজেলা আওয়ামী লীগ (২০০৩-বর্তমান)।