news-137.jpg

সাংবাদিকতার প্রবাদ পুরুষ আবুল মনসুর আহমেদ এর জন্মদিন আজ

শামীম আজাদ আনোয়ার 03 September ,2021 3 years ago 47

সাংবাদিকতায় আদর্শ, রাজনীতিতে প্রবাদ পুরুষ, সাহিত্যে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে, আইন পেশায় সফলতার শীর্ষে একজন ব্যক্তি একাধারে এতসব কিছু শুধু কল্পনাতেই কল্পনা করতে পারেন! কিন্তু এসব কিছুই যিনি একাধারে এনেছিলেন, সবকিছুকেই করেছিলেন নিজের করতলগত, তিনি আমাদের সবার প্রিয় ব্যক্তিত্ব কিংবদন্তী আবুল মনসুর আহমেদ।

ইতিহাস খ্যাত এ মহান ব্যক্তি জন্মগ্রহণ করেন ১৮৯৮ সালের ৩রা সেপ্টেম্বর ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশাল উপজেলার ধানীখোলা গ্রামের বিখ্যাত ফরাজী বংশে। তাঁর দাদার নাম আরমাল্লা ফরাজী, পিতার নাম আব্দুর রহিম ফরাজী এবং মাতার নাম মীর জাহান খাতুন। তিনি তাঁর বাবা মায়ের তৃতীয় সন্তান। তাঁর আরও তিনজন ভাই ছিলেন। ছোটবেলা থেকেই তিনি অত্যন্ত আত্মমর্যাদা সচেতন, জেদী এবং মেধাবী ছিলেন। সে সবের স্বাক্ষর তিনি আমৃত্যু রেখে গেছেন।

আবুল মনসুর আহমেদের পরিবার ছিলো ওয়াহাবী আন্দোলনের সাথে যুক্ত। তাঁর দাদার বড় ভাই আশেকউল্লাহ ফরাজী ছিলেন ওয়াহাবী আন্দোলনের একজন সক্রিয় কর্মী এবং বিখ্যাত তলোয়ার চালনাকারী। এ সবের সুবাদে তাঁর প্রাথমিক শিক্ষাজীবন শুরু হয় নিজ গ্রামেই একটি মক্তবে। সেখানকার উস্তাদ ছিলেন তাঁরই চাচা মুনশী ছমিরদ্দিন ফরাজী। সেখানে তাঁর আরবী-ফারসী পড়ার পত্তন ঘটে। এরপর ১৯০৯ সালে ত্রিশালের দরিরামপুর মাইনর স্কুলে তিনি ক্লাস থ্রি তে ভর্তি হন। ১৯১১ সালে দিল্লীতে সম্রাট পঞ্চম জর্জের দরবার উপলক্ষ্যে স্কুলের সবচেয়ে ভালো ছাত্র হিসেবে তিনি অনেকগুলি ইংরেজী ও বাংলা বই পুরস্কার পেয়েছিলেন। এরপর ১৯১২ সালে তিনি ময়মনসিংহ শহরে মৃত্যুঞ্জয় স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তি হন। এখানে ভর্তির পরও তিনি পড়ালেখায় কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখেন এবং ১৯১৭ সালে কৃতিত্বের সাথেই তিনি ম্যাট্রিক পরীক্ষা পাশ করেন। রাজনীতির সাথেও তাঁর পরিচয় ঘটে এখানে পড়া অবস্থাতেই। এরপর তিনি ভর্তি হন জগন্নাথ কলেজে এবং সেখান থেকে ১৯১৯ সালে কৃতিত্বের সাথে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন।

১৯২০-২১ সাল। সময়টা ছিল খিলাফত আন্দোলন ও অসহযোগ আন্দোলনের। এ সময় তিনি ঢাকা কলেজে বিএ-তে অধ্যয়নরত। উভয় আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জ্ঞাপন পূর্বক তিনি কলেজ বয়কট করেন এবং মহাত্মা গান্ধীর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে কংগ্রেসে যোগদান করেন। কিন্তু অধ্যাপক ল্যাংলির বিশেষ আদেশে তিনি বিএ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন এবং ফলাফল না জেনেই গ্রামে ফিরে আসেন। অসহযোগ আন্দোলনের একটি বিশেষ নীতি ছিলো,‘ব্যাক টু ভিলেজ’। গ্রামে এসে তিনি আরেক কিংবদন্তী পুরুষ ও তাঁর বাল্যবন্ধু আবুল কালাম শামছুদ্দিনের সাথে মিলে একটি পল্লী সমিতি করেন এবং স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি নিজে হন এ স্কুলের অবৈতনিক হেডমাস্টার। পরবর্তীতে খেলাফত আন্দোলনে আরও ব্যাপক ভূমিকা রাখার জন্য তিনি ময়মনসিংহ শহরে আসেন এবং তৎকালীন ন্যাশনাল স্কুলে চল্লিশ টাকা বেতনে মাস্টারীর চাকুরী নেন। খুব দ্রুতই তিনি ময়মনসিংহ জিলা খেলাফত কমিটির সাধারণ সম্পাদক পদে আসীন হন। বছরকাল ঘুরতে না ঘুরতেই খেলাফত আন্দোলন ও অসহযোগ আন্দোলন উভয়ই স্তিমিত হয়ে আসে এবং তিনি মাস্টারী পেশায় আর মন ধরে রাখতে পারছিলেন না। ইতোমধ্যেই তিনি খেলাফত আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির আহবানে ১৯২২ সালে কলকাতায় যান এবং সেখানে আবুল কালাম শামছুদ্দিনের সহায়তায় ‘মাসিক মোহাম্মদী’ ও ‘সুলতান’ পত্রিকায় লিখালিখি আরম্ভ করেন। এরই মাঝে আইন সভার নির্বাচনের দিনক্ষণ চূড়ান্ত হয় এবং ময়মনসিংহ জিলা থেকে নির্বাচনে প্রার্থীতা করেন আবুল মনসুর আহমেদের নেতা তৈয়বুদ্দীন আহম্মেদ। নির্বাচনে ধনবাড়ির বিখ্যাত জমিদার সৈয়দ নবাব আলী চৌধুরী ছিলেন তার প্রতিদ্ব›দ্বী। আবুল মনসুর ছোটবেলা থেকেই ছিলেন প্রজা আন্দোলনের সমর্থক। তিনি ময়মনসিংহে ফিরে এলেন এবং নবাব বাহাদুরের বিরুদ্ধে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশগ্রহণ করলেন এবং ‘নবাব বাহাদুরের বাহাদুরী’ শীর্ষক নির্বাচনী ইশতেহার লিখলেন। নির্বাচনে নবাব সাহেব ধরাশায়ী হলেন এবং তৈয়বুদ্দীন আহমেদের বিজয়কে জনমানস থেকে শুরু করে নেতাকর্মীগণ সবাই এক বাক্যে আবুল মনসুর আহমেদের কৃতিত্ব বলে স্বীকার করে নিলেন। এরপর তিনি আবার কলকাতায় ফিরে গেলেন এবং আবুল কালাম শামছুদ্দীনের প্রচেষ্ঠায় ‘ছোলতান’ পত্রিকায় প্রথমে ত্রিশ এবং পরবর্তীতে চল্লিশ টাকা বেতনে চাকুরী গ্রহন করেন। এসময় তিনি দেশবন্ধুর গুণগ্রাহী হয়ে উঠেন এবং স্বরাজ্য দলের একজন একনিষ্ঠ ভক্ত সমর্থকে পরিণত হন। ১৯২৫ সালে দেশবন্ধুর আকস্মিক মৃত্যুতে সারা বাংলাতেই এক অনিশ্চয়তার দোল দেখা দেয়। এসময় বাংলায় সা¤প্রদায়িক দাঙ্গাও দেখা দেয় ভয়ানকরূপে। এরপর তিনি প্রজা আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে পড়েন এবং একই সাথে হিন্দু-মুসলিম স¤প্রীতি রক্ষার কাজও করে যাচ্ছিলেন। কিন্তু কংগ্রেস পার্টি এক চোখা ভাবে সব কাজে মুসলমানদের বিরোধিতা এবং স্বার্থবিরোধী কাজ করতে থাকায় তিনি মুসলিম লীগে যোগদান করেন কিন্তু পাশাপাশি কংগ্রেস সদস্যপদ তখনও ত্যাগ করেননি। এসময় তিনি কংগ্রেসের ময়মনসিংহ জিলা কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন। পরে তিনি তৎকালীন প্রাদেশিক মুসলিম লীগের সাধারণ সম্পাদক মৌঃ মুজিবুর রহমানের অনুরোধে ময়মনসিংহ জেলায় ফিরে আসেন এবং ময়মনসিংহ জেলা শাখা মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠা করেন এবং নিজে জেলা সভাপতি হন। তিনি একই জেলার আঞ্জুমানে ইসলামীয়ার সভাপতিও ছিলেন।

ময়মনসিংহে ফিরে এসে তিনি প্রজা সমিতির সংগঠনের দিকে মনযোগী হন এবং পাশাপাশি ময়মনসিংহ জজ কোর্টেও ওকালতি আরম্ভ করেন। ইতোমধ্যেই তিনি কলকাতার ‘রিপন কলেজ’ থেকে আইন শিক্ষা গ্রহণ করেছিলেন এবং ১৯২৯ সালে বার কাউন্সিল পরীক্ষা দিয়ে পাশ করেন। ১৯২৯-১৯৩৮ সাল পর্যন্ত তিনি ময়মনসিংহে অবস্থান করেন এবং জজ কোর্টে প্র্যাক্টিস করেন। একই সাথে তিনি জেলার সংগঠনগুলি দক্ষতার সাথেই চালাচ্ছিলেন। ইতোমধ্যে অবিভক্ত বাংলার ইতিহাসে প্রথম সংসদীয় নির্বাচন ঘনিয়ে আসলো এবং তিনি শেরে-বাংলা একে ফজলুল হকের অনুরোধে কৃষক প্রজা পার্টিতে যোগদান করলেন। একই সাথে তিনি এ পার্টির জেলা সভাপতিরূপে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। সমগ্র বাংলা জুড়ে নির্বাচনে তিনি কৃষক প্রজা পার্টির মূল নীতি-নির্ধারকদের একজন ছিলেন এবং নির্বাচনী ইশতেহার তাঁরই প্রস্তুতকৃত ছিলো। নির্বাচনে হক সাহেব জয়যুক্ত হন এবং কৃষক প্রজা পার্টি সরকার গঠন করে। তখন তিনি আবারও কলকাতায় ফিরে আসেন এবং কৃষক প্রজা পার্টির দৈনিক পত্রিকা ‘কৃষক’ এর সম্পাদক রূপে কাজ আরম্ভ করেন। এদিকে কৃষক আন্দোলনে যোগদান করেন টাঙ্গাইলের ধনবাড়ির জমিদার নবাব আলী চৌধুরীর ছেলে নবাবজাদা হাসান আলী চৌধুরী। জেলা কমিটিগুলোতে নবাবজাদা হাসান আলী সাধারণ সম্পাদক রূপে এবং আবুল মনসুর আহমেদ সভাপতিরূপে কাজ করে যাচ্ছিলেন। ময়মনসিংহে কৃষক প্রজা পার্টির কাজ একসাথেই তারা দুজনে এগিয়ে নিচ্ছিলেন। পূর্বেই অত্যাচারী জমিদার রূপে প্রজা সাধারণের মাঝে পরিচিতি পাওয়া নবাব বাহাদুর আলী চৌধুরীর ছেলে বলে প্রথম দিকে নবাবজাদা হাসান আলী চৌধুরী কিছুটা অসুবিধায় পড়েছিলেন বটে কিন্তু আবুল মনসুরের অসাধারন বাগ্মিতায় তাঁর সে অজনপ্রিয়তা জনপ্রিয়তায় রূপ নিতে দেরী করেনি। দুজনে মিলে প্রজা আন্দোলনকে অনেকটা শক্তিশালী করেন। প্রায় কাছাকাছি সময়ে তিনি হক সাহেবের দৈনিক নবযুগ পত্রিকারও প্রতিষ্ঠাকালীন সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। আবুল মনসুর আহমেদ ব্যক্তি জীবনে সুভাষচন্দ্র বসু এবং শরতচন্দ্র বসুর খুবই ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন এবং তাঁর অনুরোধ রক্ষার্থেই অনেকদিনের তিক্ততা ভেঙে সুভাষ বাবু, গান্ধীজী ও জিন্নাহ সাহেবের সাথে দেখা করেছিলেন। ইতোমধ্যেই বাংলায় বিরাট রাজনৈতিক পরিবর্তন ঘটে। সুভাষচন্দ্র বসুর অন্তর্ধান, শেরে-ই-বাংলা থেকে স্যার নাজিমউদ্দিন হয়ে শহীদ সোহরাওয়ার্দির মূখ্যমন্ত্রীত্ব, শেরে-বাংলার বিরোধী দলীয় নেতা হওয়া, শেখ মুজিবের মত ছাত্রনেতার উত্থান সহ ইত্যাদি ঘটনাবলী ঘটে। আবুল মনসুর এ সময় শহীদ সোহরাওয়ার্দীর একজন ঘনিষ্ঠ সহচর হয়ে উঠেন এবং মুসলিম লীগ এর ব্যানারে ১৯৪৬ সালে ময়মনসিংহের ত্রিশাল আসন হতে জাতীয় আইন সভার সদস্য হন কিন্তু জিন্নাহ সাহেবের নির্দেশে অধিবেশন বয়কট করেন। পাকিস্তান আন্দোলনের একজন একনিষ্ঠ সমর্থক ও কর্মী ছিলেন তিনি। শহীদ সোহরাওয়ার্দী প্রতিষ্ঠিত দৈনিক ইত্তেহাদ পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন তিনি। কাগজের আদর্শ, মাপ, চমৎকার সব লিখা, অসাধারণ সম্পাদকীয়, ক্ষুরধার মন্তব্য ইত্যাদি দিয়ে ইত্তেহাদ পত্রিকা তখনকার দিনে বাংলার সবচেয়ে জনপ্রিয় পত্রিকায় পরিণত হয় এবং ভারতীয় উপমহাদেশের সাংবাদিকতায় এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকে। দেশভাগের পর তিনি অন্য অনেক বিশিষ্ট নেতার মত কলকাতায় কিছুদিন থেকে যান এবং সেখানে অবস্থানরত মুসলিম জনসাধারনকে সা¤প্রদায়িকতার হাত থেকে বাঁচানোর কাজে আত্মনিবেদন করেন।

ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগ গঠিত হয়। ১৯৫০ সালে তিনি কলকাতা হতে ময়মনসিংহে ফিরে আসেন এবং পুনরায় আইন ব্যবসায় যোগ দেন। শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও ভাসানী সাহেব স্বয়ং ময়মনসিংহে তার বাসায় এসে তাঁকে আওয়ামী লীগে যোগদান করান এবং ময়মনসিংহ জেলায় আওয়ামী লীগ গঠন, প্রচার ও প্রসারনের দায়িত্ব দিয়ে চলে যান। আবুল মনসুর আহমেদের নেতৃত্বেই বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলায় বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রাচীন দল আওয়ামী লীগের উত্থান ঘটে এবং তিনি নিজে হন এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। তাঁর সুপারিশেই সারাদেশে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে তৎকালীণ মুসলিম লীগ নেতাদের পরিবর্তে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সভাপতি হবার সুযোগ পান এবং মুসলিম লীগের বিশালতা খর্ব হওয়া শুরু করে। এরই মাঝে ভাষা আন্দোলন তুমুলরূপে দেখা দেয়। তিনি এতে সরাসরি জড়িয়ে পড়েন। এর আগেই তিনি ভাষা আন্দোলন প্রশ্নে প্রথম লিখা ‘পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা উর্দু না বাংলা’ লিখে ভাষা আন্দোলনে নিজের সহমত পোষণ করেন।

ভারতের তৎকালীণ শিল্পমন্ত্রী ও পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রী মোরারাজি দেশাই কর্তৃক অভ্যর্থনা প্রাপ্ত হন আবুল মনসুর আহমেদ।

এরপর তিনি আওয়ামী লীগের নতুন কমিটিতে সেন্ট্রাল ভাইস প্রেসিডেন্ট হন এবং প্রথম প্রাদেশিক ও জাতীয় ইলেকশনে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী মেনিফেস্টো তৈরীর দায়িত্ব তাঁর কাঁধেই বর্তায়। পরবর্তীতে যুক্তফ্রন্ট গঠনেও তাঁর ভূমিকা রয়েছে। একুশে ফেব্রæয়ারীর স্মৃতি রক্ষার্থে তিনি নির্বাচনে যুক্তফ্রন্টের ইশতেহারকে একুশটি দফায় পরিণত করেন। নির্বাচনে তাঁর এ দফাগুলোকে কাজে লাগিয়েই যুক্তফ্রন্ট তুমোল জনপ্রিয়তা অর্জন করে এবং নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী হয়। এ বিজয়কে ঐতিহাসিকগণ ব্যালট বিপ্লব বলেও আখ্যা দেন। আবুল মনসুর আহমেদ নিজে ত্রিশাল থেকে বিশাল ব্যবধানে জয়ী হন এবং তাঁর প্রতিদ্বন্দী সব প্রার্থীরই নির্বাচনী জামানত বাজেয়াপ্ত হয়। তাঁর বাল্যবন্ধু কিংবদন্তী পুরুষ আবুল কালাম শামছুদ্দিন ছিলেন তাঁর নির্বাচনী এলাকার মুসলিম লীগ প্রার্থী। যুক্তফ্রন্ট সরকার গঠিত হলে কিছুদিনের মাঝেই যুক্তফ্রণ্টের শরীক দল গুলোর মাঝে বিরোধ দেখা দেয় এবং শেখ মুজিবুর রহমান শেরে-ই-বাংলার নেতৃত্বের প্রতি অনাস্থা প্রস্তাব আনেন সংসদে। এ নিয়ে আওয়ামী লীগ ও অন্য শরীক দলগুলোর মাঝে বিরোধ চরমে উঠলেও আবুল মনসুর শেষ পর্যন্ত ঐক্য রক্ষার জন্য কাজ করেন। এরপর ১৯৫৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর আতাউর রহমান খাঁর নেতৃত্বে পূর্ব পাকিস্তানে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন কোয়ালিশন মন্ত্রিসভা গঠিত হলে তিনি পূর্ব পাকিস্তানের যুক্তফ্রন্ট সরকারের শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পান। তিনি ছয়দিন ওই দপ্তরের মন্ত্রী ছিলেন। কিন্তু এরই মাঝে কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে (১৯৫৬-৫৭) তিনি পাকিস্তান কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব লাভ করেন এবং প্রধানমন্ত্রী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর অনুপস্থিতিতে কিছুদিনের জন্য পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেন। এসময়কালেই তিনি এক সরকারী অনুষ্ঠানে পূর্ব পাকিস্তানের অধিকার ও নিরাপত্তা প্রসঙ্গে তৎকালীন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী এবং পরে রাষ্ট্রপতি আইয়ুব খানের সাথে তুমুল বাগবিতন্ডা ও বচসায় জড়িত হন এবং তখন থেকেই উভয়ের সম্পর্কের চরম অবনতি ঘটে। পাকিস্তানের প্রথম শাসন তন্ত্র রচনায় তাঁর অবদান চিরস্মরণীয় এবং বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার ক্ষেত্রে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। কিছুদিন পরেই সামরিক শাসন জারি করা হলে তিনি ইস্কান্দর মির্জা ও আইয়ুব খানের শাসনামলে বেশ কয়েকবার জেল খাটেন এবং ষাটের দশকের প্রথমভাগে রাজনীতি থেকে সক্রিয় অংশগ্রহন হতে অবসর গ্রহণ করেন। কিন্তু বাংলার মানুষের অধিকার আদায়ের বেলায় তিনি আমৃত্যু ছিলেন সক্রিয় কর্মী। লাহোরে ১৯৬৬ সালে ৫-৬ ফেব্রুয়ারী শেখ মুজিবুর রহমান ছয় দফা প্রস্তাব পেশ করেন। অনেক জনপ্রিয়তা পাবার পাশাপাশি এ প্রস্তাবের বিরুদ্ধে শক্তিশালী দলও গড়ে উঠে। মাওলানা ভাসানী, আতাউর রহমান খানসহ অনেক বিশিষ্ট নেতাই এ প্রস্তাবের বিরুদ্ধে চলে যান। এসময় শেখ মুজিবুর রহমান আবুল মনসুর আহমেদের শরণাপন্ন হন। ছাপাখানার অপ্রতুলতার কারণে সেকালে প্রচার-প্রচারণা চলত ছোট ছোট পুস্তিকার মাধ্যমে। আবুল মনসুর আহম্মেদ ছয় দফার সমর্থন পূর্বক একটি পুস্তিকা লিখে দেন এবং সপ্তাহান্তের মাঝেই ছয় দফার পক্ষে অভূতপূর্ব সমর্থন চলে আসে। উনসত্তরের গণ অভ্যুত্থানের সময়ও তিনি ছিলেন বাঙালি নেতাদের অন্যতম উপদেষ্টা।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আবুল মনসুর আহমেদের ঘনিষ্ঠ সহচর আতাউর রহমান খানের মতে ‘মনসুর ভাই পূর্ব পাকিস্তানি রাজনীতিবিদদের ‘রাজনৈতিক হরিঠাকুর হয়েছিলেন আমৃত্যু। ভুল তো তার হতেই পারে, আর দোলন যে তার প্রজন্মের বৈশিষ্ট্য!

আবুল মনসুর আহমদ বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দলীয় রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকলেও হাস্যরসাত্মক লেখক হিসেবেই তিনি সর্বসাধারণের কাছে সমধিক পরিচিত। সাহিত্যের সবচেয়ে কঠিন দিক বলা হয় ব্যাঙ্গ সাহিত্যকে আর এটাকেই তিনি বেছে নিয়েছিলেন তাঁর লেখনীর প্রধান মাধ্যম হিসেবে। সাহিত্যের অন্যান্য আঙিনায়ও স্বাচ্ছন্দ্যে পদচারণা করেছেন তিনি। যে অঙ্গনেই তিনি কাজ করেছেন, সেখানেই শীর্ষে অবস্থান নিয়েছেন। ব্যঙ্গ-সাহিত্যে বলতে গেলে উভয় বাংলায় তিনি ছিলেন অপ্রতিদ্বদ্বী। তাঁর প্রতিটি স্যাটায়ারই কালোত্তীর্ণ। সমাজপতি, ধর্মগুরু, রাজনীতিবিদ, মন্ত্রী, ব্যবসায়ী, পেশাজীবী যেখানেই তিনি কোনো দুর্নীতির সন্ধান পেয়েছেন সেখানেই তাঁর লেখনীর মাধ্যমে কশাঘাত করেছেন। তাঁর ব্যঙ্গ-বিদ্রুপের রসাঘাত কশাঘাতে পরিণত হয়ে সমাজকে পরিশোধিত করত। এ আঘাত ক্ষয়িষ্ণু সমাজের অবক্ষয়িত মূল্যবোধ আচার-অনুষ্ঠানকেই শুধু আক্রমণ করেনি, যারা এসব প্রসঙ্গ নিয়ে মিথ্যার জাল বুনে জীবনধারণ করতেন, তাদের তিনি নাস্তানাবুদ করেছেন। এসব রচনার পাঠকদের একদিকে যেমন মনে হবে, চরিত্রগুলো সবই খুব চেনা তেমনি এদের কার্যকলাপও খুব পরিচিত। অনায়াসেই বলা যায়, আবুল মনসুর আহমেদ সমকাল, সমাজ, জনগণ ও রাজনীতিসচেতন গল্পকার। সমাজের অতি কাছে ছিল তাঁর বসবাস। জীবনের কঠিন বাস্তবতায় হেঁটে চলায় নানা অনুঘটনা ভিড় করেছিল তাঁর অভিজ্ঞতার ডালিতে। আর খোলা চোখে দেখা ঘটনাপুঞ্জ ও চরিত্রের সন্নিবেশ ঘটেছে তাঁর সাহিত্যকর্মে।

তাঁর আয়না নামক গ্রন্থে ‘আয়নার ফ্রেম’ নামক ভূমিকায় জাতীয় কবি নজরুল ইসলাম স্পষ্ট ধারণা দিয়েছেন ‘এমনি আয়নায় শুধু মানুষের বাইরের প্রতিচ্ছবিই দেখা যায়। কিন্তু আমার বন্ধু শিল্পী আবুল মনসুর যে আয়না তৈরি করেছেন, তাতে মানুষের অন্তরের রূপ ধরা পড়েছে। যে সমস্ত মানুষ হরেক রকমের মুখোশ পরে আমাদের সমাজে অবাধে বিচরণ করছে, আবুল মনসুরের আয়নার ভেতরে তাদের স্বরূপ মূর্তি মন্দিরে, মসজিদে, বক্তৃতার মঞ্চে, পলিটিকসের আখড়ায়, সাহিত্য সমাজে বহুবার দেখেছি বলে মনে হচ্ছে।’

আবার খ্যাতিমান লেখক অন্নদাশঙ্কর রায় বলেন, ‘আয়না লিখিয়া আবুল মনসুর আহমেদ প্রাতঃস্মরণীয় হইয়াছিলেন। ফুড কনফারেন্স লিখিয়া তিনি অমর হইলেন।’

স¤প্রদায়ের প্রতি প্রত্যক্ষ ও উচ্চকিত হৃদ্যতা থাকা সত্তে¡ও আবুল মনসুর আহমেদ তাঁর প্রতিটি পদক্ষেপেই অসা¤প্রদায়িকতার পরিচয় দিয়েছেন। এ-প্রসঙ্গে অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের বক্তব্যটি উল্লেখযোগ্য : ‘পরশুরাম হিন্দু দেবদেবী নিয়ে অনেক কিছু বলেছেন, হিন্দু স¤প্রদায় তা সহ্য করেছে। আবুল মনসুর আহমেদের দুঃসাহস সেদিন সমাজ সহ্য করেছিল। আজ কোনো সম্পাদক এমন গল্প ছাপতে সাহস করবেন কিনা এবং সমাজ তা সহ্য করবে কিনা সে-সম্পর্কে আমার সন্দেহ আছে। আবুল মনসুরের আক্রমণের লক্ষ্য কোনো ব্যক্তি, ধর্ম বা স¤প্রদায় নয়, তাঁর বিদ্রোহ কুসংস্কারের বিরুদ্ধে। আয়না প্রকাশের এতকাল পরেও মনে হয়, এরকম একটি গ্রন্থের প্রয়োজন আজো সমাজে রয়ে গেছে।”

আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী বলেন, ‘আবুল মনসুর আহমেদ বাংলাদেশের স্যাটায়ার রচনার ক্ষেত্রে যে পূর্ব বাংলার পরশুরাম এ-সম্পর্কেও বোধ করি কেউ দ্বিমত হবেন না।’  তিনি আরও বলেন, ‘দীর্ঘদিন তিনি সক্রিয় রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন। এক সময় কেন্দ্রের প্রভাবশালী মন্ত্রী ছিলেন। পরিণত বয়সে নিজের রাজনৈতিক জীবনের স্মৃতিকথা লিখেছেন, আমার দেখা রাজনীতির পঞ্চাশ বছর। এ বইটির অনেক তথ্য অনেক ঘটনা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে, মতভেদ রয়েছে, নতুন ব্যাখ্যাও রয়েছে। কিন্তু কেউ একথা অস্বীকার করেন না যে, এ বইটি পূর্ব বাংলার রাজনৈতিক সাহিত্যের বহুদিনের অভাব ভালোভাবে পূরণ করেছে।’  শুদ্ধ চিন্তার আবুল মনসুর আহমেদ সাংবাদিকতা করেছেন, রাজনীতি করেছেন, ওকালতি করেছেন এবং সবচেয়ে অবাক করা ব্যাপার হলো, এমন একজন মানুষ আবার সাহিত্যচর্চাও করেছেন। এজন্য তাঁকে ভালোভাবে বুঝতে হলে আলাদা-আলাদাভাবে অন্তত তিনটি জীবনী লেখা দরকার বলে অনেকে মনে করেন যার একটি হবে সাংবাদিক ও সম্পাদক হিসেবে, একটি সাহিত্যিক হিসেবে এবং অপরটি রাজনীতিবিদ হিসেবে। পত্রিকার সম্পাদকীয় লেখা সম্পর্কে একটা মজার কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ কথা তিনি বলে গেছেন। আমাদের এখনকার সম্পাদকদের এ-কথাগুলো কাজে লাগতে পারে। তাঁর মতে : ‘সম্পাদকীয় লিখিতে হইলে সম্পাদকদিগকে সব বিষয়ে ‘পন্ডিত’ হতে হয়। এঁরা সব ব্যাপারে সকলের স্বনিয়োজিত উপদেষ্টা। এঁরা জিন্না সাহেবকে রাজনীতি সম্বন্ধে, গান্ধীজীকে অহিংসা সম্বন্ধে, আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্রকে রসায়ন সম্বন্ধে, ডা. আনসারীকে চিকিৎসা সম্বন্ধে, হক সাহেবকে (এ কে ফজলুল হক) ওজারতি সম্বন্ধে, শহীদ সাহেবকে (হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী) দলীয় রাজনীতি সম্বন্ধে, মাওলানা আযাদকে ধর্ম সম্বন্ধে, এমনকি জেনারেল দ্য গলকে যুদ্ধনীতি ও স্টালিনকে কমিউনিজম সম্বন্ধে উপদেশ দিয়া থাকেন। সেই উপদেশ না মানিলে কষিয়া গালও তাঁদের দিয়া থাকেন। উপদেশ দেওয়া এঁদের কর্তব্য ও ডিউটি। সেজন্যই তাঁরা সম্পাদক। সেজন্যই ওঁদের বেতন দেওয়া হয়।’

তাঁর রচনাবলীর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, ব্যঙ্গরচনা-আয়না (১৯৩৬-১৯৩৭), ফুড কনফারেন্স (১৯৪৪), গালিভারের সফরনামা। স্মৃতিকথা-আত্মকথা (১৯৭৮, আত্মজীবনী), আমার দেখা রাজনীতির পঞ্চাশ বছর (১৯৬৯), শেরে বাংলা হইতে বঙ্গবন্ধু (১৯৭২)।

অন্যান্য রচনা- ‘সত্য মিথ্যা (১৯৫৩)’, ‘জীবনক্ষুধা (১৯৫৫)’, ‘আবে হায়াত (১৯৬৪)’, ‘হুযুর কেবলা’, ‘বাংলাদেশের কালচার’ (১৯৬৬)।

প্রতিভার দিক দিয়ে অন্তত তিনটি ক্ষেত্রে তিনি উল্লেখযোগ্য অগ্রণী ভূমিকা রেখে গেছেন, যা আজো আমাদের জন্য গ্রহণীয়। ব্যক্তিজীবনে আবুল মনসুর আহমেদ ছিলেন চার সন্তানের জনক। তাঁর স্ত্রীর নাম আকিবুন্নেসা। তাঁর সন্তানদের মাঝে সকলেই উল্লেখযোগ্য কর্মে জড়িত। তাঁর ছেলেদের মাঝে অন্যতম মাহবুব আনাম ছিলেন বিশিষ্ট সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ এবং বিভিন্ন কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের পরিচালক। তাঁর অন্য একজন ছেলে মতলুব আনাম ছিলেন একজন বিখ্যাত কলামিস্ট ও লেখক। তাঁর আরেক ছেলে মনজুর আনামও বিখ্যাত হয়ে আছেন সাংবাদিকতায়। তাঁর ছোট ছেলে মাহফুজ আনাম বিখ্যাত সাংবাদিক ও সমাজসেবামূলক নানান কাজে জড়িত। তাঁর নাতনী তাহমিমা আনামও বিশ্বখ্যাত লেখিকা।

সাহিত্যকর্মে অবদানের জন্য তিনি বাংলা একাডেমী পুরস্কার (১৯৬০), স্বাধীনতা দিবস পদক (১৯৭৯), নাসিরুদ্দীন স্বর্ণপদকসহ বিভিন্ন পুরষ্কার লাভ করেন। ১৯৭৯ সালের ১৮ মার্চ এ মহান কিংবদন্তী ব্যক্তি ঢাকায় পিজি হাসপাতালে ভর্তি অবস্থায় মারা যান এবং বাংলাদেশ ও বাংলা হারায় এক মহামূল্যবান রত্মকে। সমাপ্তি ঘটে একটি যুগের। তাঁর নামে ময়মনসিংহে একটি সড়কের নামকরণ করা হয়েছে।

তথ্যসূত্র :

১. আমার দেখা রাজনীতির পঞ্চাশ বছর

২. আয়নার ফ্রেম’-আয়না

Share This

FOLLOW US ON FACEBOOK

অনুসন্ধান করুন

আমাদের সাথে যোগাযোগ

সর্বশেষ সংবাদ

ময়মনসিংহে ওভারটেক করতে গিয়ে প্রাণ গেল সিএনজির ৭ যাত্রীর

16 February, 2024 10 months ago ত্রিশাল বার্তা প্রতিবেদক 2708

সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান মীর সালমা

31 January, 2024 10 months ago ত্রিশাল বার্তা প্রতিবেদক 3094

সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান মীর সালমা

31 January, 2024 10 months ago ত্রিশাল বার্তা প্রতিবেদক 2911

ত্রিশালসহ দেশের ৯ পৌরসভার ভোটগ্রহণ ৯ মার্চ

21 January, 2024 11 months ago ত্রিশাল বার্তা ডেস্ক 2708

সারাজীবন দুর্নীতির বিরুদ্ধে ছিলাম : স্বাস্থ্যমন্ত্রী

19 January, 2024 11 months ago ত্রিশাল বার্তা ডেস্ক 2624

সুখী সমাজ গড়াই হবে অঙ্গীকার : পরিকল্পনামন্ত্রী

19 January, 2024 11 months ago ত্রিশাল বার্তা প্রতিবেদক 614

ফরজ কাম ছাড়া থানায় যাবেন না : ব্যারিস্টার সুমন

19 January, 2024 11 months ago ত্রিশাল বার্তা ডেস্ক 584

আমি অন্যায় করব না, কাউকে করতেও দেব না

18 January, 2024 11 months ago ভালুকা (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি 655

ত্রিশাল ইউনিয়ন পরিষদে স্বল্পমূল্যে টিসিবির পণ্য বিতরণ

17 January, 2024 11 months ago হানিফ আকন্দ 698

ময়মনসিংহ-৩: স্থগিত কেন্দ্রের ভোটে পপি জয়ী

13 January, 2024 11 months ago ত্রিশাল বার্তা প্রতিবেদক 838

স্কুল শিক্ষক থেকে ভূমিমন্ত্রী

13 January, 2024 11 months ago ত্রিশাল বার্তা ডেস্ক 598

মন্ত্রিসভার মুরুব্বি সালাম, তরুণ নওফেল

13 January, 2024 11 months ago ত্রিশাল বার্তা ডেস্ক 898

সড়কে প্রাণ গেল পুলিশ সদস্যের

13 January, 2024 11 months ago ত্রিশাল বার্তা প্রতিবেদক 703

জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে ত্রিশালে জাতীয় পার্টির মতবিনিময় সভা

18 November, 2023 1 years ago ত্রিশাল বার্তা প্রতিবেদক 826

পোস্টকে ঘিরে তুলকালাম, এলাকা ছাড়া মেয়র সুমন

16 September, 2023 1 years ago ময়মনসিংহ প্রতিনিধি 5252

ভালুকায় সামাজিক অবক্ষয় রোধে আলোচনা সভা 

16 September, 2023 1 years ago আনোয়ার হোসেন, ভালুকা প্রতিনিধি 694

বান্দরবন, কক্সবাজার, চট্টগ্রাম যাচ্ছেন জাতীয় সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য নাফিজ মাহবুব

26 May, 2023 1 years ago ত্রিশাল বার্তা প্রতিবেদক 874

চায়ের স্টলের আড্ডা বিভিন্ন অপরাধ জন্ম দেয় : ত্রিশাল থানার ওসি

13 May, 2023 1 years ago কামরুজ্জামান মিনহাজ : (ত্রিশাল বার্তা) 940

বিধবা কৃষাণীর ধান কেটে বাড়িতে পৌঁছে দিল ত্রিশাল উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি মেহেদী ও সা.সম্পাদক সোহান

28 April, 2023 1 years ago ত্রিশাল বার্তা প্রতিবেদক 1332

বিধবা কৃষাণীর ধান কেটে বাড়িতে পৌঁছে দিল ত্রিশাল উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি মেহেদী ও সা. সম্পাদক সোহান

28 April, 2023 1 years ago ত্রিশাল বার্তা প্রতিবেদক 970

জনপ্রিয় সংবাদ

ত্রিশালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৫ তম জম্মদিন উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা

28 September, 2021 3 years ago ত্রিশাল বার্তা প্রতিবেদক 86640

আসপাডা পরিবেশ উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের বিরুদ্ধে সড়ক দখলের অভিযোগ

09 January, 2023 1 years ago এস.এম হুমায়ুন কবীর : 47995

ভালুকায় শত কোটি টাকা মূল্যের বনের জমি উদ্ধার : গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে দেয়াল

05 October, 2021 3 years ago মো. নজরুল ইসলাম, ময়মনসিংহ 44962

মানুষের সেবা করার মন মানসিকতা নিয়েই ত্রিশালে কাজ করছেন মিনহাজ

25 September, 2021 3 years ago ত্রিশাল বার্তা প্রতিবেদক 10202

ত্রিশাল নামের উৎপত্তি

15 September, 2021 3 years ago রাশেদ আনাম 8467

ত্রিশালে আওয়ামী রাজনীতির প্রাণপুরুষ রুহুল আমীন মাদানী এমপি

17 September, 2021 3 years ago ত্রিশাল বার্তা প্রতিবেদক 8121

ত্রিশালে ইকবালের নেতৃত্বে ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত হলেন ডাঃ দীপু মনিসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ

24 September, 2021 3 years ago ত্রিশাল বার্তা প্রতিবেদক 6948

ত্রিশাল হাসপাতালে ৪টি অক্সিজেন সিলিন্ডার দিলেন জননেতা ইকবাল

28 August, 2021 3 years ago ত্রিশাল বার্তা প্রতিবেদক 6812

মোঃ মিনহাজ সামাজিক ব্যক্তিত্ব এবং বহুমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী, স্বপ্ন দেখছেন ত্রিশালের উন্নয়ন করার

17 September, 2021 3 years ago ত্রিশাল বার্তা প্রতিবেদক 6584

ত্রিশালবাসী চায় ইকবাল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক হোক

03 October, 2021 3 years ago ত্রিশাল বার্তা প্রতিবেদক 6521

ত্রিশাল ইউনিয়নে চেয়ারম্যান প্রার্থী জাকিরের ব্যাপক নির্বাচনী গণসংযোগ

03 October, 2021 3 years ago ত্রিশাল বার্তা প্রতিবেদক 5869

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৭০ বছর পর মা-ছেলের দেখা

25 September, 2021 3 years ago ত্রিশাল বার্তা ডেস্ক 5690

পোস্টকে ঘিরে তুলকালাম, এলাকা ছাড়া মেয়র সুমন

16 September, 2023 1 years ago ময়মনসিংহ প্রতিনিধি 5252

সরকারের উন্নয়ন মানুষের মধ্যে তুলে ধরতে জিল্লুর রহমান আকন্দের গণসংযোগ

26 August, 2021 3 years ago শামীম আজাদ আনোয়ার 4899

নভেম্বরে এসএসসি, ডিসেম্বরের শেষে এইচএসসি পরীক্ষা : শিক্ষামন্ত্রী ডা. দিপু মনি

25 September, 2021 3 years ago ত্রিশাল বার্তা ডেস্ক 4822

মোক্ষপুরের হাফিজুল ইসলাম তালুকদার ইন্তেকাল করেছেন

23 September, 2021 3 years ago ত্রিশাল বার্তা প্রতিবেদক 4563

‘মানুষ মানুষের জন্য’ একথা আবারও প্রমাণ করলেন ত্রিশালের সমাজকর্মী মিনহা‌জ

03 October, 2021 3 years ago ত্রিশাল বার্তা প্রতিবেদক 4439

এসএসসি-এইচএসসির চূড়ান্ত সময়সূচি প্রকাশ

27 September, 2021 3 years ago ত্রিশাল বার্তা ডেস্ক 4370

ত্রিশালের নতুন ইউএনও'র সাথে ত্রিশাল প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের মতবিনিময়

28 September, 2021 3 years ago ত্রিশাল বার্তা প্রতিবেদক 4233

আমি মানুষ ও সমাজের কল্যাণে কাজ করে যেতে চাই -মোঃ মিনহাজ

07 September, 2021 3 years ago ত্রিশাল বার্তা প্রতিবেদক 4032

ত্রিশাল বার্তা আর্কাইভ

আমাদেরকে সাবস্ক্রাইব করুন

ভিডিও গ্যালারি

Designed & Developed by A.H.M. Shamim Reza